নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে আচ করতে পেরে ত্রিপুরা রাজ্যের বিরোধীরা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে। এই অভিযোগ ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যর। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী আগরতলার কৃষ্ণনগর এলাকার প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন ২০১৮ সালে রাজ্যের শাসন ক্ষমতার পালা বদলের পর একটিও রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেনি। একই ভাবে ২০২৩ সালের ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচনের আগেও পরে কোন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেনি। তবে বিরোধীরা এই প্রচেষ্টায় রয়েছে, তাই নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে জানান। রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ২০১৩ সালের নির্বাচনের আগে এবং পরে কি ধরনের সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে মানুষ এই সব ভুলেনি। তখন প্রত্যন্ত গ্রামীণ এবং পাহাড়ি এলাকায় শুধু নয়, রাজধানী আগরতলার বুকেও একের পর এক রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। বিজেপি কোন ধরনের সন্ত্রাস চায় না বলে এদিন আবার তিনি স্পষ্ট করে দেন। সাধারণ মানুষ যাতে নিজেরা ভোট প্রয়োগ করে তার জন্য বিজেপির তরফে আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে জানান। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন ভোট নিয়ে বিজেপির শ্লোগান হচ্ছে পহেলের মতদান ফির জল পান। ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এদিন বিরোধী বিশেষ করে বামেদের নাম না করে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, তারা আগে যা করেছে এখন এমন করার দুঃসাহস যেন না করে অন্যথায় পরিণতি ভয়ংকর হবে বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন। পাশাপাশি এদিন নবেন্দু ভট্টাচার্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সমালোচনা করেন। মানিক সরকার বিভিন্ন নির্বাচনে সভায় গিয়ে বলার চেষ্টা করছেন, বিজেপি সরকার আবার ক্ষমতায় এলে সংবিধানকে বাঁচানো যাবে না। সিপিআইএম দলের যে সংবিধান রয়েছে তাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে তারা ভারতের ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্র শব্দটিকে সংবিধান থেকে তুলে দিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। এনিয়ে দেশের ভিতর এবং বিভিন্ন দেশে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে বামেদের। এরপরও তারা তাদের দলের সংবিধান পরিবর্তন করেন। এখন তারাই সংবিধান বিপন্ন এবং সংবিধান রক্ষার কথা বলছে। বিরোধীরা দেশের মঙ্গল চায় না। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচন অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। আগে ও পরে বামেদের কোন অভিযোগ ছিল না, কিন্তু এখন হঠাৎ করে মানিকবাবু বামেদের ১৭ শতাংশ ভোট লুট হয়েছে বলে অভিযোগ করছে। অথচ এই বাম নেতারাও নির্বাচনের আগে দাবি করে ছিলেন এবারের নির্বাচনে তাদের জয় নিশ্চিত। বিরোধী বামফ্রন্ট নেতাদের উপর মানুষ যে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ তা রাজ্যের যেদিকে তাকানো যাচ্ছে সেদিকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় বাম নেতারা যাওয়ার পর মানুষ তাদের কাছে জবাব চাইছেন এবং তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এত তাড়াতাড়ি বাম নেতাদের করুন অবস্থা হয়েছে যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে হয়েছে তাদের, অথচ মানিক সরকার নিজে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেসের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন এন এল এফ টি’র যোগ রয়েছে। একই ভাবে কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয় জঙ্গিসংগঠন এটি টিএফকে জন্ম দিয়েছে বামেরা। অথচ দুটি দল একে অপরের সঙ্গে জোট করেছে এটা কি গণতন্ত্রের অংশ বলে প্রশ্ন তুলেন রবীন্দ্র ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিন রাজনীতি করার পর এখন নিজেকে প্রচারের আলোকে রাখার জন্য মানিক বাবু এসব অসত্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। তিনি এইসব না করলেও পারতেন বলে জানান।
সেই সঙ্গে পূর্ব ত্রিপুরার লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণকে বহি:রাগত এবং আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে মন্তব্য করছে। এমন মন্তব্য থেকে বোঝা যায় নারীদের সঙ্গে বাম নেতাদের মানসিকতা কি? এ সব থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দেন নবেন্দু ভট্টাচার্য।