সাধারণ মানুষ আর দিব্যাঙ্গদের মধ্যে এখন কোন পার্থক্য নেই। প্রতিভা বিকাশে ও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে দিব্যাঙ্গজনেরা কোনও অংশে কম নন। সঠিক সুযোগ সুবিধা পেলে তারাও সমাজে তাদের অবস্থান দেখাতে সক্ষম। বর্তমান কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার দিব্যাঙ্গদের উন্নতিতে এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে চলছে। আজ আগরতলা স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে প্রথমবারের মত দিব্যাঙ্গদের নিয়ে খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস-২০২৩ এর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যের দিব্যাঙ্গ ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের প্রতিভা দেখাতে সক্ষম হচ্ছেন। তারা শিক্ষা, ক্রীড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যে, বহিঃরাজ্যে পুরস্কৃত হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরই দিব্যাঙ্গদের সঠিক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ‘দিব্যাঙ্গ’ শব্দটিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারেরই দেওয়া। তিনি বলেন, রাজ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার ব্যক্তিকে দিব্যাঙ্গ তালিকায় নিবন্ধিত করা হয়েছে। ১৫ হাজারের উপর দিব্যাঙ্গজনকে ২ হাজার টাকা করে মাসিক পেনশন দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে আরও দিব্যাঙ্গজনকে এই পেনশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০ অভিযান শুরু হয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে সরকারি সুযোগ ও সুবিধা প্রদান করা। এই সরকার মানুষের অধিকার সুনিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকার। তিনি বলেন, এই সরকার কারো প্রতি দয়া নয়, মানুষকে তার অধিকার সম্পর্কে সজাগ করে তাকে সঠিক অধিকার প্রদান করতে সচেষ্ট। এই সরকার চায় রাজ্যের প্রতিটি নাগরিককে স্বনির্ভর করে তুলতে। মুখ্যমন্ত্রী খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমসের সাফল্য কামনা করেন। উল্লেখ্য, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর এবং যুব বিষয়ক ক্রীড়া দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আজ থেকে দুইদিন ব্যাপী প্রথমবারের মত দিব্যাঙ্গজনদের নিয়ে খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস আজ শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা প্রতিকীরূপে মাধ্যমিকের ৫ জন এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ৫ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর হাতে চেক তুলে দেন। এছাড়াও প্রতিকী হিসাবে ইউডিআইডি কার্ড, ম্যারেজ গ্র্যান্ড, নির্ময়া হেলথ ইন্সুরেন্স কার্ড, সিকিউরিটি পেনশন ও চলন সামগ্রী দিব্যাঙ্গজনদের হাতে তুলে দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, এই সরকার চায় উন্নয়নের যাত্রায় সমাজের প্রতিটি নাগরিককে নিয়ে চলতে। সরকার চায় একটি আত্মনির্ভর সমাজব্যবস্থা। এই আত্মনির্ভরতার পথে দিব্যাঙ্গরাও সামিল রয়েছেন। তিনি বলেন, এই সরকার দিব্যাঙ্গদের সঠিক মূল্য দিতে জানে। এই প্রথম রাজ্যে দিব্যাঙ্গদের নিয়ে এরকম খেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার প্রত্যেকটি দিব্যাঙ্গজনের উন্নতি সাধনে সচেষ্ট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ, উত্তর-পূর্বাঞ্চল সমান গতিতে এগিয়ে চলছে। রাজ্যও এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, পরিবহণ ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, যুব বিষয়ক ও ক্রীরা দপ্তরের অধিকর্তা এস বি নাথ এবং সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা স্মিতা মল এম. এস।