Sunday, December 22, 2024
বাড়িখবররাজ্যসমবায় আগামীদিনে রাজ্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ দেখাবে : মুখ্যমন্ত্রী

সমবায় আগামীদিনে রাজ্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ দেখাবে : মুখ্যমন্ত্রী

ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সমবায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, সততা, স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে সমবায়গুলিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। তাতে গ্রামীণ অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে। আজ আগরতলা টাউন হলে ৭০তম অখিল ভারত সমবায় সপ্তাহ উপলক্ষে সমবায় দপ্তর ও ত্রিপুরা রাজ্য সমবায় ইউনিয়ন আয়োজিত আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। সমবায় সপ্তাহ উদযাপনে এবারের ভাবনা হচ্ছে ‘পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতি এবং স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে সমবায়ের ভূমিকা’। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সমবায় আগামীদিনে রাজ্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ দেখাবে। ‘সমবায়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধি’ এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে সমবায়ের সুফলগুলি তৃনমূলস্তর পর্যন্ত পৌঁছানোর পাশাপাশি সমবায় ভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল, নতুন জাতীয় সমবায় নীতি তৈরী করা সহ সমবায়গুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ’র নেতৃত্বে সমবায় মন্ত্রক সমবায়ের উন্নতিকল্পে বিভিন্ন যুগান্তকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে আগামী ৫ বছরে দেশে ৩ লক্ষ প্যাক্স গঠন, দূর্বল প্যাক্সগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা, দেশে একটি সমবায় বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা, প্যাক্সগুলিকে কম্পিউটারাইজড করা ইত্যাদি। তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরায় ৩,৯৮৩টি বিভিন্ন পেশাভিত্তিক সমবায় সমিতি রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি শীর্ষ সমবায় সমিতি, ১৪টি প্রাথমিক বিপনন সমিতি, ৫৬টি ল্যাম্পস, ২১২টি প্যাক্স, ৩৪০টি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি, ৪১৫টি দুগ্ধ সমবায় সমিতি, ৩ ১০টি ভোগ্য পণ্য সমবায় সমিতি, ৩২৫টি পশুপালন সমবায় সমিতি এবং ২৩০০টি অন্যান্য সমবায় সমিতি রয়েছে। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৮ লক্ষ্যেরও বেশী মানুষ বিভিন্ন সমবায় সমিতির কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রভিত্তিক ১৭২৬টি নতুন সমবায় সমিতি গঠিত হয়েছে। সমিতির কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সমবায় মন্ত্রকের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে রাজ্যের ২৬৮টি ল্যাম্পস প্যাক্সের কম্পিউটারাইজড করার কাজ শুরু হয়েছে। ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের অন্তর্গত স্বগাত পোর্টালের মাধ্যমে সমবায় সমিতিগুলির নিবন্ধিকরণের জন্য আবেদন করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন ঔষধি পরিযোজনার মাধ্যমে সুলভমূল্যে রাজ্যের সকলস্তরের মানুষের কাছে ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শষ্য ভান্ডার ভারতে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ১১টি জেলাকে চিহ্নিত করে গোডাউন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ত্রিপুরার গোমতি জেলার খিলপাড়া প্যাক্সে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। ১.৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই গোডাউন নির্মাণ সম্পন্ন করা হবে। অনুরূপভাবে দেশের প্রেত্যেকটি জেলায় অন্তত একটি করে গোডাউন নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি ল্যাম্পস প্যাক্সে প্রধানমন্ত্রী কৃষক সমৃদ্ধি কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্তের কথাও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তাছাড়া সমবায় সমিতিগুলির অডিটের কাজ ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেছেন। অনুষ্ঠানে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্য সমবায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিধায়ক মাইলায়ু মগ, ত্রিপুরা মার্কফেডের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দেব, গোমতী মিল্ক প্রোডিউসার্স ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রতন ঘোষ, ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান কমলকান্তি সেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের গোমতী জেলার জন্য একটি মোবাইল এটিএম ভ্যান এবং সোনামুড়া বিভাগীয় ল্যাম্পসের রুরাল মার্ট- এর পতাকা নেড়ে উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রকল্পে ল্যাম্পস প্যাক্সগুলিকে ঋণ অনুমোদন পত্র, মাইক্রো এটিএম তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী সহ আন্যান্য অতিথিগণ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বোতাম টিপে উদয়পুর এবং শান্তিবাজারে দুটি এটিএম কাউন্টারের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে রাজ্য সমবায় সমূহের বিভিন্ন কর্মসূচি ও সফলতার উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া বলেন, সমষ্টিগতভাবে কোন কাজ করলে তাতে সফলতা আসে। ল্যাম্পস-প্যাক্সগুলিকে ঋণ গ্রহনের পাশাপাশি সঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। আগামী দিনে রাজ্যের উন্নয়নে সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করার হাতিয়ার হচ্ছে সমবায়। গ্রামীণ অর্থনীতিকে মজবুত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ আত্মনির্ভরতার ক্ষেত্রে সমবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য্য। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমবায় দপ্তরের নিয়ামক এস মগ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

19 − 19 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য